ইমরান হোসেন,বটিয়াঘাটা || কখনো হাঁটু সমান কাঁদা ভেঙে আবার কখনোবা খেয়া নৌকায় পারাপার হতো নদীর দুই পাড়ের হাজার হাজার মানুষ। তবে এখন আর তাদের কষ্ট করে পারাপার হতে হয় না, কাঁঠের পিলার ও পাটাতন এবং নাট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে একটি কাঠের ব্রীজ। বিশাল সু-দৈর্ঘ্যের এ ব্রীজটি দেখতে যেমন নান্দনিক তেমনি মজবুত। এতেই খুসি এলাকাবাসী।
নির্মিত ব্রীজটি বটিয়াঘাটা উপজেলার শৈলমারী নদীর উপর কৈয়া ও শৈলমারী ঘাট এলাকায়। এ উপজেলার ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে এক সময়ের যৌবনে ভরপুর খরস্রোতা শৈলমারী নদী। যা ভদ্রা হয়ে ঝপঝপিয়া নদীতে মিশে গেছে। নদীটির শৈলমারী ও কর কৈয়া খেওয়া ঘাট এলাকার দু’পাড়ের দক্ষিণ পার্শ্বে শৈলমারী, হোগলবুনিয়া কাছারি, বাগুলাভাঙ্গা, পার-বটিয়াঘাটা ও এবং উত্তর পাড়ে কৈয়া, ঘোলা, জয়খালী, ও রাজবাধ, হোগলাভাঙ্গা চকশৈলমারী গ্রাম অবস্থিত।
জানা গেছে, স্বাধীনতা পরবর্তী ওই সকল গ্রামের হাজারো মানুষের যাতায়াতের ভরসা ছিলো একমাত্র খেয়ার নৌকা। ২০২০ সাল পর্যন্ত এ সকল অঞ্চলের মানুষ নদীর উপর খেওয়া পার হয়ে জেলা ও উপজেলা শহরসহ হাট-বাজার এবং স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতো। এরপর নদীটির যৌবন হারাতে শুরু করলে এক পর্যায়ে জোয়ারের সময় খেয়া পার এবং ভাটার সময় হাঁটু সমান কর্দমাক্ত নিয়ে পারাপার হতে হতো। গত দুই বছর ধরে জনদুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। জোয়ার ভাটায় সবসময়ই হাঁটু পরিমাণ কর্দমাক্ত হয়ে তারা যাতায়াত করতো। গত বছরের শেষের দিকে জনসাধারণের প্রতিনিয়ত দূর্ভোগের দৃশ্য নজরে আসে স্থানীয় জনসাধারণ ও সমাজসেবকদের। ভাটার সময় অনেকে পায়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বয়োবৃদ্ধ চরে আটকে পড়ে থাকতে দেখা যায়, স্থানীয় এবং ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও অর্থায়নে ব্রীজ নির্মাণের সংকল্প নেন। শুরু হয় কৈয়া ও শৈলমারী খেওয়া ঘাট এলাকায় প্রায় তিনশো মিটার দৈর্ঘ্যের ব্রীজ নির্মাণের কাজ।
নদীর উপর কাঁঠের ব্রীজ নির্মাণ বিশেষজ্ঞদের প্রযুক্তি পরামর্শ নিয়ে হাজার হাজার পিচ কাঠের জয়েন্ট পিলার ও পাটাতন নিয়ে এসএস স্কু নাটের জয়েন্টের ভরপুরে নির্মাণ করা হয়েছে শৈলমারী-কৈয়া খেয়াঘাট ব্রীজ। যা দেখতে খুব নান্দনিক ও অতি মজবুত। শুধু তাই নয়, ব্রীজের দুই পারে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা মাটি ভরাট করে ইট ও ভ্যাটস দিয়ে পাকাকরণও করা হয়েছে। প্রযুক্তি, সরঞ্জাম এবং শ্রমিক খরচ মিটিয়ে ব্রীজটি নির্মাণ করতে সর্বসাকুল্যে প্রায় ২৩ লক্ষ টাকা ব্যায় হয়েছে, বর্তমানে ব্রীজের উপর যাত্রী নিয়ে ইজিবাইক, চার্জার ভ্যান, মোটরসাইকেল সহ হালকা যানবাহন ব্রীজের উপর দিয়ে সহসা যাতায়াত করছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, নদী পার হয়ে বটিয়াঘাটা সদর, জলমা ও সুরখালি ইউনিয়নের হাজারো মানুষ মহানগরী খুলনা শহর, বটিয়াঘাটা ও ডুমুরিয়া উপজেলা শহরে যাতায়াত করে থাকেন। প্রতিদিন অন্তত দুই হাজার লোক এই ব্রিজ ব্যাবহার করছে, জেলা ও উপজেলা শহরের বিভিন্ন স্কুল- কলেজ, অফিস-আদালত, কৃষি উৎপাদিত পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে এবং হাঁট- বাজার করতে যেতে হয়। মুমুর্ষু কোন রোগীকে চিকিৎসায় নিতে শহরে যেতে হলে তাদের ঘন্টার পর পর ঘন্টা সময় কালক্ষেপণ হতো।মৃত শৈলমারি নদীর উপর ব্রিজ হওয়ায় এলাকার লোক অনেক খুশি।
আগে ৪ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে জেলা ও উপজেলা শহরে যেতে হতো। এখন তারা অনায়াসে কম সময়ে ব্রীজের উপর দিয়ে যানবাহনে করে পার হয়ে কৈয়া বাজার হয়ে শহরে পৌঁছাতে পারে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ভ্যান চালক অনিল বিস্বাস প্রতিবেদক মোঃ ইমরান হোসেন কে জানান, আগের থেকে আয় দ্বিগুণ, এক সময় শোলমারের নদীতে মাছ ধরতেন রিশিকান্ত মল্লিক এখন সবজি চাষ করেন এই ব্রিজ দিয়ে যাতায়াতে তার এখন আরো অনেক বেশি খরচ কম, দৃষ্টিনন্দন এই বৃষ্টি দেখতে খুলনা থেকে সরকারি ছুটি শুক্র শনি উপচে পড়া ভ্রমণ প্রবাসীরা ছবি ও ভিডিও তুলতে দেখা যায় প্রাকৃতিক দৃশ্য নদীর উপর দিয়ে এত বড় কাঠের ব্রিজ খুলনার নিকট আর নেই তাই ভ্রামন পিপাসু দের আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে,অনেকেই নদীর চরে এসে পিকনিক করতে দেখা যায়।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।