অতনু চৌধুরী(রাজু)বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ||
বাগেরহাটে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার ঐতিহ্য কাঁসা-পিতলের বাসন-কোসনের ব্যবহার। নিত্য নতুন সিরামিক, মেলামাইন, কাঁচ ইত্যাদি সামগ্রী সহজলভ্য হওয়ায় মানুষ কাঁসা-পিতলের ব্যবহার একেবারেই কমিয়ে দিয়েছে। নিকট অতীতেও পিতল-কাঁসার জিনিসপত্র গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে নিত্য ব্যবহৃত সামগ্রী হিসেবে দেখা যেত।
এবিষয়ে বাগেরহাট সদর এলাকার হেকমত উল্লাহ বলেন, এখন আর মানুষের বাড়িতে কাঁসা-পিতলের হাঁড়ি, পাতিল, কলস, গস্নাস, গামলা, বালতি, বদনা, থালা’সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস তেমন একটা দেখা যায় না। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন কাঁসা-পিতলের কিছু জিনিসপত্র ব্যবহার করলেও মুসলিমদের ঘরে এসবের ব্যবহার নেই বললেই চলে। যার জন্য কাঁসা-পিতলের এসব জিনিসপত্রের ব্যবসায়ীরা পৈতৃক ব্যবসা গুটিয়ে অন্য ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, আগে দেখা যেত বিয়েতে বা পালা-পর্বন, আকিকা, সুন্নতে-খাৎনায় উপহার হিসেবে বড় কাঁসা-পিতলের হাঁড়ি, কলস, পেস্নট, বাসন-কোসন দেওয়ার রেওয়াজ ছিল। এখন আর সামাজিক অনুষ্ঠানে এসব জিনিসপত্র উপহার দেওয়া হয় না।
বাগেরহাটের মোংলা পৌর শহরে এক দোকান মালিক জানান, আগে হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন বাড়িতে তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন করতে এসব জিনিসপত্র ব্যবহার করতেন। তাছাড়া তাদের বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে এসব পণ্য কিনতেন। বিশেষ করে বিবাহ, আকিকা’সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণে এসব জিনিসপত্র কিনে উপহার দেওয়া ছিল একটা নিজের সম্মান প্রদর্শনের বিশেষ আকর্ষণ। এখন এসব সংস্কৃতি আর নেই। এখন আধুনিক মেলামাইনের জিনিসপত্র, প্রেসারকুকার, ইলেকট্রিক চুলা, রাইস কুকার, ইলেকট্রিক কেটলি, অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি, পাতিল, থালা-বাসনসহ বিভিন্ন তৈজষপত্র বের হওয়ায় কাঁসা-পিতলের এসব জিনিসের ব্যবহার আর এখন নেই বললেই চলে। বর্তমানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে ধর্মীয় আচার-আচরণসহ সামাজিক জীবনে এর ব্যবহার কিছু থাকলেও মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজনরা আর এসব জিনিসপত্র কিনেন না। তাই, তারা তাদের বাপ-দাদার দীর্ঘদিনের এ ব্যবসা ছেড়ে অন্য ব্যবসার দিকে ঝুঁকছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।