শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনা || ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারী সরকারের পতন পরবর্তী দেশের পরিস্থিতি, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের জন্য দোয়া, নির্বাচনের জন্য সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (PR) পদ্ধতি চালু, ৭ দফা বাস্তবায়ন এবং সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার ভিত্তিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে জনমত তৈরি করার লক্ষ্যে- কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বুধবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭ টায় খালিশপুর গোয়ালখালী অডিটরিয়ামে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর শাখার উদ্যোগে “তৃণমূল দায়িত্বশীল সম্মেলন” ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়ালের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মুফতি ইমরান হোসাইন এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়। তৃণমূল দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাওঃ লোকমান হোসাইন জাফরী।
সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন নগর সহ-সভাপতি মুফতী আমানুল্লাহ, শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, আলহাজ্ব আবু তাহের, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবু গালিব, অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি মাওলানা দ্বীন ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মাওলানা হাফিজুর রহমান, আলহাজ্ব হুমায়ুন কবির, মোঃ মঈন উদ্দিন, এইচএম আরিফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিএম কিবরিয়া, শেখ হাসান ওবায়দুল করীম, আলহাজ্ব আবুল কাশেম, মাওলানা নাসিম উদ্দিন, হাফেজ আব্দুল লতিফ, গাজী মিজানুর রহমান, আলহাজ্ব আমজাদ হোসেন, আলহাজ্ব সরোয়ার হোসাইন বন্দ, মোল্লা রবিউল ইসলাম, গাজী ফেরদাউস সুমন, আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, মাস্টার মইন উদ্দিন ভূইয়া, কাজী তোফায়েল হোসেন, মোহাম্মদ কবির হোসেন, আলহাজ্ব মারুফ হোসেন, ক্বারী মোঃ জামাল, আব্দুল্লাহ আল মাসুম, আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, মোঃ কামরুজ্জামান, মোঃ আলফাত হোসেন লিটন, শ্রমিক নেতা এস এম আবুল কালাম আজাদ, মোঃ রেজাউল করিম, যুব নেতা মোঃ ইমরান হোসেন মিয়া, মোঃ আব্দুস সবুর, ছাত্র নেতা মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোঃ মাহাদী হাসান মুন্না, মোস্তফা আল গালিব, হাবিবুল্লাহ মেজবাহ সহ থানা ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথি মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী তৃণমূল দায়িত্বশীলদের উদ্দেশ্যে বলেন, ফ্যাসিবাদ স্বৈরশাসনের অবসান হয়েছে। এখন সময় দেশ গড়ার। এখন সময় সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচারভিত্তিক বাংলাদেশ নির্মাণে জনমত তৈরি করতে হবে । তবে এই যুগ সন্ধিক্ষণে আমাদেরকে দেশের শত্রু এবং জণগণের শত্রুদের চিহ্নিত করে জাতির সামনে তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। গণদুশমন, গণহত্যাকারী, লুটেরা, দুর্নীতিবাজ আর ভোট চোরেরা যাতে আগামীতে পূণর্বাসিত হতে না পারে তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, গ্রহনযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইবুনাল গঠন করে জুলাই গণহত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে, একই সাথে গত ১৬ বছরে সংগঠিত সকল রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হত্যাযজ্ঞ, গণহত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করতে হবে, এক্ষেত্রে যে সকল ব্যক্তি বা সংগঠন দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদেরকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
তদন্ত সাপেক্ষে বিগত বছরের সকল দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সকল সম্পত্তি ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে এবং বিদেশে পাচারকৃত টাকা ফেরত আনবার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
বিগত বছরে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে। সকল দুর্নীতি ও টাকা পাচারের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ প্রজাতন্ত্রের যে সকল কর্মচারী আইন, সংবিধান, শপথ লঙ্ঘন করে অপেশাদার আচরণ করেছেন তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় জনগোষ্ঠির চিন্তা-চেতনা ও অনুভূতির বিরুদ্ধে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে এবং অবাধ, সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (PR) পদ্ধতি চালু করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনের বিগত ১৬ বছরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এদেশের সাধারণ শিক্ষাখাতের মান ও নৈতিকতা। এই ক্ষতি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে দেশপ্রেমিক শিক্ষাবিদ ও উলামায়ে কেরামের সমন্বয়ে একটি জাতীয় শিক্ষাকমিশন গঠন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। গ্রাম পুলিশকে জাতীয়করণ করে তাদের সম্মানজনক বেতন ও ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে। ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন হত্যা, লুটতরাজ ও অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগের বিরুদ্ধে ছিলো। শিল্প ও কল-কারখানা ধ্বংসের বিরুদ্ধে ছিলো না, ছিল না সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ। সেজন্য আমরা বিশ্বাস করি, যারা লুটতরাজ, দখলদারী-অরাজকতা ও সংখ্যালঘুদের উপর কোন রকম হুমকি সৃষ্টিকারী কার্যকলাপে লিপ্ত, তারা এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত কেউ না বরং তারা সুযোগ সন্ধানী। সুতরাং আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই সকল অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান করছি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে, দেশের সকল নাগরিক সমান মর্যাদা ও অধিকার প্রাপ্ত। ধর্মের কারণে কাউকে আঘাত করা বা কাউকে প্রতিপক্ষ বানানোকে ইসলাম ও রাষ্ট্রীয় আইনও সমর্থন করে না। আমাদের আন্দোলনের চেতনাও তা সমর্থন করে না।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।