মোঃ ইমরান হোসেন,বটিয়াঘাটা প্রতিনিধি || খুলনা বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মিজানুর রহমান। তিনি বটিয়াঘাটা উপজেলায় যোগদান করার পর থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিত্র ধীরে ধীরে পাল্টে যেতে থাকে।তার বিরামহীন সেবার কার্যক্রম,১৮টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ছুটে চলা,কঠোর হাতে করোনা মোকাবেলা করা,এমনকি প্রতিদিন শত শত রোগী দেখার ফাঁকে ফাঁকে ভর্তি রোগীদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত খোঁজখবরের দৃশ্য দেখে মানুষ তার নাম দিয়েছে মানবতার ফেরিওয়ালা।
বটিয়াঘাটা ৭ ইউনিয়ন ও ৬৩ ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। ইউনিয়ন গুলো হচ্ছে জলমা,বটিয়াঘাটা সদর,গঙ্গারামপুর,সুরখালী,বালিয়াডাঙ্গা, আমিরপুর ও ভান্ডার কোট। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার জন্য ছুটে আসে তার কাছে সেবা নিতে।তার যোনদানের পরেই সাংবাদিক,জনপ্রতিনিধির এবং উপজেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে সকলের সহযোগিতা কামনা করে,সেবার কার্যক্রম শুরু করেন। তার যোগদান করার পর থেকে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে,এনকি তার চেম্বারের সামনে সব সময় রোগিদের ভিড় থাকে।
ইতোপুর্বে হাসপাতালে সামনে বা বারান্দায় ঔষধ কোম্পানির লোকজন ভিড় করতে দেখা যেত। এমনকি রোগীদের পেসক্রিপসন নিয়ে টানাটানি করতো তারা। এখন এ ধরনের দৃশ্য আর চোখে পড়েনা।
ভেন্নাবুনিয়ার মালতি রায় (৫৫) বলেন,আমি লোকজনের কাছে শুনলাম, আমাদের হাসপাতালে বড় ডাক্তার এসেছে। আমি টিকিট কেটে সিরিয়ালে দাড়াই। অনেক সিরিয়াল পরে আমার ডাক আসে। ভিতরে যাওয়ার পর আমাকে বসতে বলেন। আমার সমস্যার কথা শুনে বিভিন্ন পরিক্ষা করে ঔষধ দিয়ে আমার মাথায় হাত রেখে বলেন,দুশ্চিন্তা করার দরকার নেই বাবা। ঔষধ খান সুস্থ হয়ে যাবেন। আমি কখনও এমন ভালো ডাক্তার বটিয়াঘাটায় দেখিনি। তার ব্যবহারে রোগী অনেক সুস্থ হয়ে যায়।
তিনি যোগদানের পর থেকে সেবার মান ও পরিবেশ উন্নতি হয়েছে। হাসপাতালে ইউজার ডিসপ্লে বোর্ড তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ডাক্তারদের চেম্বারে বসার জন্য উন্নত মানের চেয়ারের ব্যবস্হা করেছেন। এছাড়া নিজস্ব অর্থায়নে চালু হয়েছে করোনা প্রতিশোধক যন্ত্রপাতি এবং প্রাথমিক সেবার মান উন্নয়ন করেছেন। তাছাড়া পালঅক্সি মিটার প্রদান করেছেন উপজেলার ১৮ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে।
পার শলুয়া এলাকার দিনেশ রায় (৬০) বলেন,আমি বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে যাই। কোন ডাক্তার দেখাবো তা বুঝতে পারছি না। এক বুড়ো আমাকে বল্লো মিজান ডাক্তারকে দেখাতে, আমি টিকিট নিয়ে যেয়ে দেখি অনেক লম্বা লাইন। দুপুরের দিকে ভিতরে যাই ডুকলেই বলেন,আমার কাছে এসে বসেন। কি কি সমস্যা আপনার বলেন। আমি সব খুলে বলার পর বিভিন্ন টেষ্ট করে আমাকে ঔষধ দেন। এবং বলেন,আর আপনাকে কষ্ট করে হাসপাতালে আশা লাগবেনা। সঠিক ভাবে ঔষধ গুলো খাবেন। তবেই আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন। তার ব্যবহারে আমি সত্যি সত্যি অনেক সুস্থ হয়ে গেছি। এমন ডাক্তার বটিয়াঘাটা সব সময় দরকার।তার যোগদানের পর থেকে পরিষ্কার পরিছন্নতা বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালে সেবার দিকনির্দেশক চিহ্নর কার্যকর করেছেন। ইউজার ফির ডিসপ্লে করেছেন।
করোনা রোগীদের সেবা দানের জন্য চিকিৎসকদের তিনিই প্রশিক্ষণ দিয়েছেন এবং কোভিড আইসোলিশন ওয়ার্ড চালু করে করোনা রোগীর সেবা দিচ্ছেন। তাছাড়া প্রান্তিক জনগনকে করোনার প্রাথমিক সেবা ও পরামর্শ প্রদানের জন্য সিএইচসিপিদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। ১৯ জন সিএইচ সিপিদের একটি করে উন্নতমানের পালর্স অক্সিমিটার বিতরণ করেন। যা ইতোপূর্বে কোন টিএইচএ দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি রোগী দেখেননি এমনকি ভর্তি রোগীদের খোঁজখবর পর্যন্ত নেননি। কিন্তু তিনি উভয় দায়িত্ব সুনামের সাথে পালন করে অল্প দিনেই সমগ্র উপজেলা ব্যাপি পরিচিতি লাভ করেছেন।
সার্বিক বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মিজানুর রহমান বলেন,আমি কাজের মানুষ। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি। সাধ্যরে সবটুকু চেষ্টা দিয়ে জনগনের সেবা করা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট। কিন্তু এই হাসপাতালটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। এখানে ২৫ জন ডাক্তার থাকার কথা কিন্তু আছে ১৩ জন। নার্স থাকার কথা ২৭ জন কিন্তু আছে ১৪ জন। এখানে পরিসংখ্যনবিদ ও ক্যাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদ রয়েছে শুন্য। আমি এসেছি উপজেলা বাসিদের সেবা দিতে। চেষ্টা করবো শতভাগ সেবা দেয়ার জন্য। সকলে আমাকে দোয়া করবেন। আমি যাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীদের সঠিক সেবাদান করে যেতে পারি।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।