এস.এম.শামীম দিঘলিয়া,খুলনা || দিঘলিয়ায় খাল খননের নামে ২০ লাখ টাকার গাছ নিধন খনন সম্পূর্ণ না করেই ঠিকাদার উধাও।
দিঘলিয়ার নাককাটি নামক একটি খালের উভয় পাড়ের জীবন্ত বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২০ লক্ষ টাকার গাছ নিধন করে খাল খনন সম্পূর্ণ না করে ঠিকাদার উধাও হয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে হঠাৎ করে উক্ত খাল খননের কাজ শুরু করেন।
এসময়ে ব্রম্রগাতী এলাকার অংশে অর্থ শতাধিক পরিবারের বসত ঘর ভেঙ্গে ও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কর্তন করে মাটি কাটা ভেকু নেওয়া হয় খালের অভ্যন্তরে। এবং উক্ত ভেকু দিয়ে নির্বিচারে অসংখ্য গাছ কর্তন ও বসবাসরত ঘরের ক্ষয়ক্ষতি করায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খান মাসুম বিল্লাহ ও মৎস্য কর্মকর্তা মনজুরুল ইসলামকে বিক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা অবগত করেন।এবং গাছ কর্তন এর বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খান মাসুম বিল্লাহ অবগত হয়ে গাছ কাটা বন্ধ করে দেয়।
এ বিষয়ে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাদের ক্ষতিপূরণ চাইলে উক্ত খাল খননের ঠিকাদার আরিফুল ইসলাম মৎস্য কর্মকর্তার অফিসে তাদের ক্ষতিপূরণ চাইতে গেলে কোন সমাধান পায়নি ভুক্তভোগীগণ। একপর্যায়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলামের কাছে গেলে তিনি ঠিকাদারকে ডেকে ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দিতে বললে উক্ত ঠিকাদার আরিফুল ইসলাম ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে স্বীকার করেন।এভাবেই বেশ কিছু দিন ধরে ভেকু দিয়ে খাল খননের কাজ করেন উক্ত ঠিকাদার একপর্যায়ে নিয়ম না মেনে খাল খনন করায় ব্রহ্মগাতী এলাকার একাধিক বাড়ির সামনে থাকা গাছ কর্তন ও বসত ঘর রান্না ঘর ভেঙ্গে ফেলে ভেকু দিয়ে।
এবিষয়ে ব্রহ্মগাতী এলাকার একাধিক ভুক্তভোগী জানান,খাল খননের সময় বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে খাল খনন করায় উক্ত বাঁধের অংশে পানিতে প্লাবিত হয়ে উক্ত পানি বিভিন্ন মৎস্য ঘেরে ও বসতবাড়িতে প্রবেশ করে।এতে করে অনেক মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে যায় ক্ষতি হয় লক্ষ লক্ষ টাকার মাছের যে মাছ ভেসে যায় পানিতে অন্যত্র।
সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী ও মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায় মৎস্য অফিসের তত্ত্বাবধায়নে ‘শরীফ এন্ড ফিলামেন্ট’ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার ব্রহ্মগাতি গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নাককাটি খালটি খননের জন্য কার্যাদেশ পেয়েছেন। যেখানে ৪ এপ্রিল থেকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে কাজ সমাপ্তির মেয়াদ রয়েছে। খালের দৈর্ঘ্য ৪.৪ কিলোমিটার। ৫৬ লাখ ৬৫ হাজার ৯৬৮ টাকার কার্যাদেশ পেয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেন। কাজ শুরুর পর থেকেই উক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের খামখেয়ালিপণায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে একাধিক পরিবার একাধিক মৎস্যচাষী। দুঃখের বিষয় খালের দৈর্ঘ্য প্রস্থ অনুযায়ী খনন সম্পন্ন না করেই দুইটি ভেকু খালের পাড়ে রেখেই উধাও হয়ে যান ঠিকাদার ও ভেকু চালক।
এভাবেই কয়েক মাস পরে ভেকু নেওয়া জন্য এক-এক সময় বিভিন্ন লোকজন এসে ভেকুর দাবী করে এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী ভেকুর মূল মালিক ও ঠিকাদারকে এসে ভেকু নিয়ে যেতে বললে তাদের কে হুমকি ধামকি প্রদর্শন করা হয়।এভাবে সময় এক একটি মহলে এসে ভেকুর দাবি করেন এবং জোর করে বেকু নিয়ে যেতে চাইলে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ভেকু দিতে রাজি না হওয়ায় পড়তে হয় হুমকির মুখে।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী প্রতিবেদককে জানান আমাদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে ভেকু নিয়ে যাক আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু ভেকুর মূল মালিক এবং ঠিকাদার কেউ আসছে না। এলাকাবাসী আরো জানান,খাল খননের নামে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলামের মাইকিং এর ফলে ইতিমধ্যে নাককাঠি খালের উভয় পাড় থেকে বিভিন্ন প্রজাতির জীবন্ত প্রায়(ছোট-বড়) ৫ হাজার কাজ কর্তন করা হয়েছে ।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম মাইকিং এ প্রচারের সত্যতা স্বীকার করে বলেন,খালের উভয় পাড় থেকে গাছগুলি সরিয়ে ফেলার অনুরোধ জানিয়েছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ বলেন,পরিবেশবান্ধব গাছ কোনভাবেই কর্তন করা যাবে না। খাল খনন করতে খালের দুই পাড়ের গাছ কোনভাবেই কাটা ও ঘর বাড়ি ভাঙ্গা যাবে না। তিনি আরো বলেন,উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাইকিং এর মাধ্যমে জীবন্ত গাছ কেটে ফেলার নির্দেশনা দিতে পারেন না। তিনি মাইকিং এর প্রচারের মাধ্যমে কেন গাছ কাটার নির্দেশনা দিয়েছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
সর্বশেষ কয়েক মাস আগে দিঘলিয়ার ব্রহ্মগাতী এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাগণ সাংবাদিকদের জানান যে উক্ত ঠিকাদার খাল খনন কাজ সম্পন্ন না করেই উধাও হয়ে যায় এবং বিভিন্ন লোক মারফত ভেকু নিতে পাঠান কিন্তু ঠিকাদার ছাড়া ভেকু না দেওয়ায় নানারকম হুমকিতে পরতে হচ্ছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।