ইমরুল ইসলাম ইমন,খুলনা প্রতিনিধি || খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় ভয়াবহ লোডশেডিং শুরু হয়েছে। ফলে গরমে মানুষ অতিষ্ঠ এবং বিদ্যুৎ নির্ভর সব কাজকর্ম বিঘ্নিত হচ্ছে। বিশেষ করে শিল্প কারখানায় উৎপাদন বিঘ্নিত হচ্ছে। লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে খুলনার অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করছেন। শহরের তুলনায় গ্রামে লোডশেডিং আরও বেশি।
খুলনা বিভাগের ১০ জেলা,বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা ও বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচ জেলাসহ মোট ২১ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)। সংস্থাটির খুলনা মহা-নগরীর বয়রা এলাকার প্রধান কার্যালয় থেকে জানা গেছে, এই ২১ জেলায় বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে প্রায় ১৪ লাখ ২৮ হাজার। এর মধ্যে শুধুমাত্র খুলনায় গ্রাহক আছে প্রায় ২ লাখ ৪৫ হাজার।
২১ জেলায় ওজোপাডিকোর আওতাধীন এলাকায় বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৬৫৯ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৬০ মেগাওয়াট, অর্থ্যাৎ লোডশেডিং ছিল ৯৯ মেগাওয়াট। এর মধ্যে শুধুমাত্র খুলনাতেই লোডশেডিং ছিল ৪৫ মেগাওয়াট। এছাড়া বরিশালে ১১ মেগাওয়াট, গোপালগঞ্জে ৫, নড়াইলে ২, মাগুরায় ৩, সাতক্ষীরায় ২, কুষ্টিয়ায় ৬, চুয়াডাঙ্গায় ৫, ফরিদপুরে ৬, রাজবাড়িতে ৪, মাদারীপুরে ৪, শরীয়তপুরে ২ ও ঝালকাঠিতে ৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল।
নগরীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মার্কেটের দোকানি ইদ্রিস আলী বলেন, ২ দিন ধরে দিন-রাতে সমানে লোডশেডিং হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের সময় বেচাকেনা বিঘ্নিত হয়।
নগরীর লোয়ার যশোর রোডের ফটোস্ট্যাট দোকানি মাহমুদ হাসান বলেন,গত ২ দিন ধরে লোডশেডিং চলছে। লোডশেডিংয়ের সময় কম্পিউটারের কাজ এবং ফটোকপি করতে পারছি না।
নগরীর নিরালার বাসিন্দা কলেজছাত্র রাসেল বলেন,খুলনায় আবার লোডশেডিং শুরু হয়েছে। লোডশেডিংয়ের সময় গরমে লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। অনেক দিন মোমবাতি কেনা লাগতো না,এখন আবার কিনতে হচ্ছে।
ডুমুরিয়া উপজেলার শাহপুর গ্রামের সাগর হেসেন বলেন, রাত-দিন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৭ বা ৮ বার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। প্রচণ্ড গরমেও ফ্যান চালানো যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ যাওয়ার পর এক ঘণ্টার মধ্যে আসে না।
ফুলতলা উপজেলা সদরের কলেজছাত্র ফকরুল আলম বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক হুমায়ুন কবীর বলেন,লোডশেডিং হলে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর কোল্ড স্টোরেজে তাপমাত্রা ঠিক রাখতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। লোডশেডিং চলাকালে জেনারেটর চালিয়ে রাখতে বাড়তি ব্যয় হয়।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওজোপাডিকোর একজন কর্মকর্তা বলেন, কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। সে কারণে ঘাটতিপূরণে লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছেন। এটা শুধু খুলনা অঞ্চলে নয়, আরও অনেক জেলায় হচ্ছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।