পরেশ দেবনাথ,কেশবপুর,যশোর || যশোরের কেশবপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন উপলক্ষে শহিদদের স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর-২৪) সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় চত্বরে (যুদ্ধ ভাসান পাদদেশে) ওই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার প্রভাত কুমার রায়-এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন, কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ বিশ্বাস,উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক,উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামী পেশাজীবি সংগঠনের সভাপতি এ্যাডভোকেট ওজিয়ার রহমান, পৌর জামায়াতে ইসলামীর আমীর তবিবুর রহমান।
এছাড়াও স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে হানাদার বাহিনীর হাতে কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টর্চার সেলে নির্যাতনে আক্রান্ত হওয়া আব্দুল মজিদ (বড়ভাই) এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা তৌহিদুজ্জামান ও নুরুল ইসলাম খোকন।
বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তানী বাহিনী ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্র যখন বুঝতে পারে তাদের পক্ষে যুদ্ধে জেতা সম্ভব না, পরাজয় অনিবার্য। তখন তারা এ দেশের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগতদিক দুর্বল এবং পঙ্গু করে দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী জাতিকে মেধাশূন্য করতে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের আধারে পাকিস্তানি বাহিনী, স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর ও আল শামসরা,অসংখ্য শিক্ষাবিদ,গবেষক, চিকিৎসক,প্রকৌশলী,সাংবাদিক কবি ও সাহিত্যিকদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে চোখ বেঁধে নির্যাতনের পর নির্মমভাবে হত্যা করে। শহিদ বুদ্ধিজীবীরা একটি স্বাধীন ও উন্নত বাংলাদেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিল। তাই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালনের মাধ্যমে আজকের তরুণ প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরতে হবে। তাহলে আগামীর প্রজন্মরা উদ্বুদ্ধ এবং অনুপ্রাণিত হয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রেখে যাওয়া আদর্শকে অনুসরণ করে দুর্নীতিমুক্ত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সমাজ গড়তে পারলে মুক্তিযুদ্ধে সকল বুদ্ধিজীবী শহিদদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।
বক্তারা আরও বলেন,জুুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা নতুনভাবে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এখন এদেশের স্বাধীনতা রক্ষা ও বৈষম্যহীন উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
আলোচনা সভা শেষে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে হানাদার বাহিনীর হাতে কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টর্চার সেলে নির্যাতন হওয়া মজিদপুর গ্রামের মোঃ আব্দুল মজিদ (বড় ভাই), ঘাঘা গ্রামের মোসলেম উদ্দীন, কন্দর্পপুর গ্রামের আবু তালেব, বারুইহাটি গ্রামের কৃষ্ণপদ দাস, একই গ্রামের শিবুপদ দাস ও গৌর চন্দ্র বিশ্বাসের হাতে শান্তনা পুরস্কার তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আলমগীর হোসেন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুপালী রানী, উপজেলা সহকারি প্রোগ্রামার আব্দুস সামাদ, সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক প্রভাষক আলাউদ্দীন আলা, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান চৌধুরী, ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি, গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা কেশবপুর উপজেলা শাখার সভাপতি শামীম আখতার মুকুল, কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান, সহকারী শিক্ষক মতিয়ার রহমানসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা- কর্মচারীবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।