খুলনার খবর।।পারিবারিক কলহের কারণে নিজের স্বামীকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য মামাতো ভাইকে নিজের বাড়িতে ডেকে নেয় সে। পরবর্তীতে তার দেখানো পন্থায় মামাতো ভাই সাতক্ষীরা জেলার তালা থানাধীন ৭নং ইসলামকাঠি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক এস এম শামীমকে হত্যা করা হয়।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে খুলনা এসপি অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এমনই বক্তব্য তুলে ধরেন পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেন।
আদালতে বৃষ্টির দেওয়া ১৬৪ ধারার ব্যাখ্য দিয়ে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের আরও জানান, বিয়ের পর থেকে সে স্বামীর সাথে সুখী ছিলেন না। প্রায়ই তাকে মারধর করতো শামীম। মারধরের ঘটনা থেকে তার মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আর এ ক্ষোভ মিটাতে গিয়ে শামীমকে হত্যার পরিকল্পনা করে বৃষ্টি। শামীমকে হত্যার ৩ দিন আগে মামাতো ভাইকে বাড়িতে ডেকে নেয়। হত্যাকান্ডের আগের দিন বৃষ্টি তার মামাতো ভাইকে শারীরিক নির্যাতনের কথা জানায়। এ জন্য স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছে বলে বৃষ্টি তার ভাইকে জানায়। শামীমকে হত্যা করতে পারবে কিনা জানতে চাইলে সে সম্মতি জানায়।
হত্যাকান্ডের দিন রাতের খাবার খেয়ে শামীম ও তার স্ত্রী তৃতীয় তলার ফাঁকা ফ্লাটে আসে। এর কিছুক্ষণ পর বৃষ্টির ভাই ওই ফ্লাটে আসে। কিভাবে কোপ দিতে হবে তা বৃষ্টি ইশারায় দেখাতে থাকে। একপর্যায়ে ছুরি দিয়ে শামীমের ঘাড়ে কোপ দেয় ওবায়দুলাহ। এরপর সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং মৃত্যু হয়। হত্যাকান্ডের পর তারা দু’জন আবারও ছাদে যায়। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি পার্শ্ববর্তী জলাশয়ে ফেলে দেয় এবং তারা দু’জনই পুনরায় দ্বিতীয় তলায় এসে শামীমের মায়ের সাথে স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, হত্যাকান্ডটি ক্লুলেস ছিল। তাছাড়া নিহত শামীমের মা রশিদা খাতুন এ ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশের একটি চৌকশ দল কাজ করে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে তাদের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতে শামীমের স্ত্রী ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছে। বৃষ্টির মামাতো ভাইয়ের বয়স কম হওয়ায় তাকে যশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।
উলেখ্য, গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ডুমুরিয়ার আঠারোমাইল এলাকার তিনতলায় নিজ বাড়িতে খুন হন যুবদল নেতা শামীম হোসেন। তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। নিহত শামীম সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম-আহবায়কক ছিলেন। নিহত যুবদল নেতার মা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রশিদা বেগম অজ্ঞাত আসামি করে ডুমুরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্তে শামীমের মাদক সংশ্লিষ্টতা, পারিবারিক অশান্তি, আর্থিক লেনদেন ও রাজনৈতিক বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এর আগে সোমবার বিকেলে ডুমুরিয়া উপজেলার আঠারোমাইল এলাকায় নিজ বায়ি থেকে শামীমের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি (৩০) ও কিশোর শ্যালক ইমন হোসেন বাদল (১৭) কে গ্রেফতার করে পুলিশ ও র্যাব-৬-এর যৌথ দল।
এর আগে গত রোববার বিকেলে নিহত যুবদল নেতার মা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রশিদা বেগম অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় মামলা করেন। তদন্তে শামীমের মাদক সংশ্লিষ্টতা, পারিবারিক অশান্তি, আর্থিক লেনদেন ও রাজনৈতিক বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছিল।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।