খুলনার খবর।।খুলনা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, কেশবচন্দ্র সংস্কৃত কলেজে অবৈধভাবে কমিটি গঠন, রাধামাধব মন্দিরের রান্নাঘর দখলের চেষ্টা এবং সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে তারা তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যাপক মাধব চন্দ্র রুদ্র। তিনি বলেন, খুলনা পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান মহেন্দ্র কুমার ঘোষ বাহাদুর শিক্ষার প্রসার ও ধর্মীয় কার্যক্রমের জন্য ৮১, সাউথ সেন্ট্রাল রোডে কেশবচন্দ্র সংস্কৃত কলেজ ও রাধামাধব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে একই আঙ্গিনায় কেশবচন্দ্র সার্বজনীন মন্দির গড়ে ওঠে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাধামাধব মন্দিরে নিত্যপূজা, ভোগরাগ, সন্ধ্যারতি, জন্মাষ্টমী, রাধাঅষ্টমী, রথযাত্রা ও অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালিত হয়। অন্যদিকে কেশবচন্দ্র সার্বজনীন মন্দিরে দুর্গাপূজা, কালীপূজা, শিবচতুর্দশী, সরস্বতী পূজাসহ সার্বজনীন পূজা অনুষ্ঠিত হয়। উভয় মন্দিরের ভোগ এক রান্নাঘরে প্রস্তুত হয়ে ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধভাবে গঠিত কলেজ কমিটির কয়েকজন নেতা ওই রান্নাঘর দখল করে সেখানে দোকানঘর নির্মাণের চেষ্টা চালাচ্ছেন, যাতে ভাড়া ও অগ্রিম টাকা আত্মসাৎ করা যায়।
অধ্যাপক মাধব চন্দ্র রুদ্র অভিযোগ করেন, রান্নার স্থান অপসারণে ব্যর্থ হয়ে ওই কমিটির সদস্যরা মন্দিরের সেবায়েতদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন, ফুল ও তুলসীর টব সরিয়ে নিয়েছেন এবং সাধু-সন্ন্যাসীদের বিতাড়িত করার হুমকি দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে ২ সেপ্টেম্বর সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এর আগেও প্রায় এক দশক আগে একই সদস্যরা রান্নাঘরের জায়গায় দোকানঘর নির্মাণের চেষ্টা চালিয়েছিল, তবে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তা ব্যর্থ হয়। মন্দির ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা তখন বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ, শৌচাগার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১২ সেপ্টেম্বর অবৈধ কমিটির সভাপতি দেবাংশু কুমার চক্রবর্তী একটি সংবাদ সম্মেলনে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ ও মন্দির নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেন, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি মন্দিরের সেবায়েতদের ইসকন সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন, যা বিভ্রান্তি ছড়ানোর অংশ।
খুলনা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ দাবি করে, কেশবচন্দ্র সংস্কৃত কলেজের কমিটি যথাযথ নিয়মে গঠিত হয়নি। কোনো সাধারণ সভা ছাড়াই এবং পূর্বের সদস্যদের মতামত ছাড়া কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা অবৈধ।
সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেন, দেবাংশু কুমার চক্রবর্তী মন্দিরের পবিত্র পরিবেশ নষ্ট করছেন, নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করছেন এবং পূজার প্রসাদ নিয়ে কটূক্তি করছেন। অতীতে তিনি সেন্ট্রাল ক্লাব পরিচালনার নামে জুয়া ও মাদকের আসর বসাতেন। মন্দির থেকে সাধু-সন্ন্যাসীদের বিতাড়িত করে পুনরায় এ ধরনের কার্যক্রম চালু করাই তার মূল উদ্দেশ্য।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, কেশবচন্দ্র সংস্কৃত কলেজ, কেশবচন্দ্র সার্বজনীন মন্দির ও রাধামাধব মন্দির—তিনটি প্রতিষ্ঠান একই আঙ্গিনায় অবস্থিত। এগুলোর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই সবার কাম্য। পূজা উদযাপন পরিষদ কোনো কমিটি গঠন বা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না; বরং তারা কেবল সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ধর্মীয় শান্তি বজায় রাখতে সচেষ্ট।
নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করেন, দখল ও আধিপত্য বিস্তারের মানসিকতা পরিহার করে তিন প্রতিষ্ঠান আগামী দিনে সহনশীলতা ও ঐক্যের সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।