মোঃ জসিম উদ্দিন তুহিন,যশোর জেলা প্রতিনিধি ||বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে যশোরের লালদীঘির জলে একে একে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। বর্ণিল আয়োজনে চলে নিরঞ্জনের শেষ আনুষ্ঠানিকতা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার রওনক জাহান। তারা পুরো প্রাঙ্গণ পরিদর্শন করেন।
এবার যশোর শহর ও শহরতলীর ৫৩টি প্রতিমা এবং ভৈরব নদীতে আরও ২টি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। ঐতিহ্যবাহী লালদীঘিতে একদিকে প্রতিমা বিসর্জন আর অন্যদিকে মঞ্চে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাত ১২টা পর্যন্ত একের পর এক পরিবেশনায় জমে ওঠে প্রাঙ্গণ। বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ থেকে ঢাক–ঢোল বাজিয়ে প্রতিমা এনে জমা হয় লালদীঘির পাড়ে। বিদায়ের আবেগ আর উৎসবের আমেজ মিলেমিশে একাকার হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। মধ্যরাতে শেষ হয় এ আয়োজন।
সন্ধ্যার পর নিরঞ্জন অনুষ্ঠানের আলোচনায় যোগ দেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। তিনি জানান, ২০০৪ সালে তাঁর প্রয়াত পিতা সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম লালদীঘিতে নিরঞ্জন অনুষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেছিলেন। ২১ বছর পর তা আজ এক বিশাল উৎসবে পরিণত হয়েছে।তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একসাথে বেড়ে উঠেছে। অতীতে ধর্মীয় উৎসব নিয়ে শঙ্কা থাকলেও এখন পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে। এ বছর যশোরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ১৬৫টি পূজা মণ্ডপে কাজ করেছেন, যাতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নির্বিঘ্নে দুর্গোৎসব পালন করতে পারেন। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভেদাভেদ ভুলে নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান।
রাত ১০টার পর মঞ্চে হাজির হয়ে জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার রওনক জাহান শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব উদযাপন করায় যশোরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তারা এ সম্প্রীতির ধারা আগামীতেও বজায় রাখার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপঙ্কর দাস রতন ও সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরি মুল্লুক চাঁন, বিএনপি নেতা হাজী আনিছুর রহমান মুকুল এবং হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের যুগ্ম মহাসচিব নির্মল কুমার বিট প্রমুখ।এ বছর যশোর জেলার মোট ৭০৮টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে যশোর সদরে ১৬৫টি, অভয়নগরে ১২৭টি,কেশবপুরে ৯৮টি, মণিরামপুরে ৯৬টি, বাঘারপাড়ায় ৯১টি, ঝিকরগাছায় ৫৪টি, চৌগাছায় ৪৮টি এবং শার্শায় ২৯টি পূজামণ্ডপ ছিল। উৎসবকে ঘিরে নেওয়া হয়েছিল পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মাঠপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মোতায়েন ছিল।শাস্ত্র মতে, এ বছর দেবী দুর্গার আগমন হয়েছে গজে হাতির পিঠে আর বিজয়া দশমীতে দেবী বিদায় নিয়েছেন দোলায় পালকিতে চড়ে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।