মোঃ আলমগীর হোসেন,লোহাগড়া(নড়াইল) প্রতিনিধি // নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ৬৬ নং পাচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে আপত্তিকর ও নানাবিধ অপকর্মের অভিযোগ পাওয়া যায়।
অভিযোগে জানা গেছে, পাচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ হাসান আরিফ লেমন তিনি স্কুল চলাকালীন সময়ে যখন মন চায় তখনই বাড়িতে চলে যান। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে মোটা অংকের টাকা নিয়ে প্রাইভেট পড়ান, ভালো রেজাল্ট করিয়ে দেবার নাম করে । ঐ শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়লে ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় ভীতি দেখান এবং প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করান। শিক্ষার্থীদের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করার সময় প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০ টাকা করে নিয়েছেন শিক্ষক লেমন।
স্কুলের পাশে ওই শিক্ষকের একটি দোকান রয়েছে ঐ দোকান থেকে খাতা, কলম ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের দ্রব্য সামগ্রী না কিনলে ক্লাস চলাকালে বিভিন্ন অজুহাতে ছাত্রছাত্রীকে মারপিট করেন। ওই শিক্ষকের স্কুলের পাশে একটি দর্জির দোকান আছে সেখান থেকে স্কুল ড্রেস তৈরি না করলে তাদের কে আড় নজরে দেখেন এবং পড়ালেখা মনোযোগ সহকারে করান না। তিনি সরকারি নিয়ম নিতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে সকাল ৭ টা থেকে প্রাইভেট পড়ান। এবং যে সকল ছাত্র-ছাত্রী ঐ শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ে তাদেরকে ক্লাসের সামনের বেঞ্চে বসান ও ক্লাস পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাইয়ে দেবার আশ্বাস দেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। চরমল্লিকপুর দক্ষিণপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিক মল্লিক গত ১ আগষ্ট ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগে বলেন, উক্ত বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক মোঃ হাসান আরিফ লেমন এর বাড়ি একই গ্ৰামে হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের কোন মূল্যায়ন করেন না। ও তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন বলে অবিভাবকদের অভিযোগ ।
গত ৩ আগষ্ট পাচুড়িয়া গ্রামের মোঃ কুদ্দুস মল্লিক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করে বলেন, ঐ শিক্ষক দুশ্চরিত্র ও লম্পট প্রকৃতির লোক এবং ঐ শিক্ষকের দোকানে উঠতি বয়সী মেয়েরা গেলে তাদের সাথে প্রেম আলাপ করেন এবং গায়ে হাত সহ চুমু খান এবং অশালীন কথা ও অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করেন। যে সকল ছাত্রছাত্রীর বাবা দূরদূরান্তে চাকরিতে থাকেন, বা বিদেশে থাকেন তাদের বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত খাওয়া সহ তাদের মায়েদের কাছে আপত্তিকর প্রস্তাব দেন বলেও বিস্তর অভিযোগ করেন অবিভাবকরা। তার বিরুদ্ধে পূর্বে থেকেই নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে।
অবভাবক সদস্য মুন্সি শরিফুল ইসলাম,সাবানা খানম,সৈয়দ বিল্লাল হোসেন,ফরিদ খাঁন,মৌসুমি খানম,নাফিজ আহম্মেদ,রাজু শেখ,আলামিন,মোস্তাফিজুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন অবিভাবক সদস্য অভিযোগ করে বলেন,দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ করে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ ও গায়ে হাত দিয়ে কথা বলা ও ভালো রেজাল্ট করিয়ে দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অশালীন আচরণ করেন। আমাদের কোমলমতি ছেলেমেয়েদের সু রক্ষার জন্য ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্ৰহন করে তাকে দ্রুত বদলী করে বিদ্যালয়সহ ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক,অভিভাবকদের সন্মান বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের আহ্বান জানান সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট।
লোহাগড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সাইফুজ্জামান খাঁন বলেন,অভিভাবকদের স্বাক্ষর সম্বলিত অভিযোগ পত্র পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। প্রধান শিক্ষক রেকসনা খানম বলেন,আমি শুনেছি স্থানীয় অবিভাবক সদস্যরা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে বেশ কয়েকটি অভিযোগ দাখিল করেছেন, বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।অভিযুক্ত শিক্ষক হাসান আরিফ লেমনের সঙ্গে কথা হলে তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,একটি কুচক্রীমহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করছে।
যে সমস্ত দপ্তরে লিখিত ভাবে অনুলিপি দিয়েছেন।দপ্তরগুলো হলো
১/ মাননীয় মন্ত্রী শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২/ সচিব প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ৩/ মহাপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ৪/ মাননীয় জেলা প্রশাসক নড়াইল। ৫/পুলিশ সুপার নড়াইল। ৬/ জেলা শিক্ষা অফিসার নড়াইল। ৭/ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লোহাগড়া নড়াইল। ৮/ অফিসার ইনচার্জ লোহাগড়া থানা, নড়াইল।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।