পরেশ দেবনাথ,কেশবপুর,যশোর // কেশবপুরে বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামাজ ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। আষাঢ়-শ্রাবণ পেরিয়ে ভাদ্র মাসের মাঝামাঝিতেও অনাবৃষ্টি ও তীব্র দাবদাহ। বৃষ্টির জন্য চারিদিকে পড়েছে হাহাকার। পানির অভাবে ফসলি জমি শুকিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পাট জাগ দিতে ব্যাপক অসুবিধার মধ্যে রয়েছে কৃষক। আমন খেত ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়ায় ধানের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শংকা দেখা দিয়েছে। স্মরণকালের অসহনীয় এ গরম আর তীব্র দাপদাহে হাঁপিয়ে উঠেছে কেশবপুরের সর্বস্তরের মানুষ ।
এ অবস্থায় যশোরের কেশবপুরে বৃষ্টির জন্য দুই রাকাত ইস্তিসকার নামাজ ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। শনিবার থেকে সোমবার পর পর তিন দিন নামাজ ও বিশেষ মোনাজাত করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। শণিবার দুপুরে তীব্র রোদ উপেক্ষা করে উপজেলার ঝিকরা বিলে এলাকাবাসীর উদ্যোগে ৬ গ্রামের ধর্মপ্রাণ তিন শতাধিক মুসল্লি এ নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতে স্বস্তির বৃষ্টির আশায় মুসল্লিরা আল্লাহর নিকট দুই হাত তুলে কান্নায় ভেঙে পড়েন ।
বিলের ভেতর নামাজ ও মোনাজাতে অংশ নেন উপজেলার বুড়িহাটি, বারুইহাটি, ফতেপুর, ঝিকরা, পাত্রপাড়া ও শ্রীপুর গ্রামের মুসল্লিরা । নামাজে ইমামতি করেন বুড়িহাটি দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আজহারুল ইসলাম। আজ ও আগামীকাল এ মাঠে একই সময়ে বৃষ্টির জন্য এই ইস্তিসকার নামাজ আদায় করা হবে। ওই এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা এ নামাজে সকলকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া, গ্রামে গ্রামে এ নামাজে অংশ নিতে দাওয়াত ইতিমধ্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
নামাজে অংশ নেয়া উপজেলার বারুইহাটি গ্রামের আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘প্রচন্ড দাবদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে ফসলি জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা পাট জাগ ও ধান রোপন করতে পারছেন না। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষ । বর্ষা মৌসুমে এমন গরম আগে কখনো দেখিনি । চারিদিকে হাহাকার চলছে । এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে ও আল্লাহর অশেষ রহমতের জন্য এ নামাজ আদায় এবং দোয়া করা হয় ।
ঝিকরা গ্রামের স্বাধীন মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ নামাজ শেষে বলেন, ‘বর্ষাকালে বৃষ্টির দেখা নেই । আষাঢ়-শ্রাবণ পেরিয়ে ভাদ্র মাসের মাঝামাঝিতেও স্বস্তির বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তির জন্য তীব্র রোদের ভেতর মুসল্লিরা নামাজ আদায় করে শান্তি ও স্বস্তির বৃষ্টির জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া প্রার্থণা করেন।’
নামাজ শেষে সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন, ‘তীব্র দাবদাহে থমকে গেছে মানুষের জীবন। বৃষ্টির জন্য ছয় গ্রামের ধর্মপ্রাণ তিন শতাধিক মুসল্লি বিলের ভেতর ইস্তিসকার নামাজ আদায় করেছি। মোনাজাতে আল্লাহর কাছে আমাদের কর্মের ফল ও পাপের কারণে কান্নায় ভেঙে পড়ে ক্ষমা প্রার্থণা করে তার রহমতের বৃষ্টি চেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সোমবারও এ মাঠে একই সময়ে বৃষ্টির জন্য এই ইস্তিসকার নামাজ আদায় করা হবে। ইতিমধ্যে সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের ১৭টি গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের মানুষদের কাছে দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছি। আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাদের কথা শুনবেন।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।