খুলনার খবর // জ্বালানি তেল ও সারের মূল্যবৃদ্ধিতে চরম সংকটে পড়েছে কৃষি খাত। সারাদেশে ধানের উপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা করছেন প্রান্তিক কৃষকরা।তেল, সার ও ফসল তোলার ব্যায় হিসাব করলে লাভের আশা দেখছেন না তারা।
বিভিন্ন জেলার প্রান্তিক কৃষকরা জানিয়েছেন, হাল চাষ, বিদ্যুৎ বিল, সার দেওয়া, ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কারে কামলা খরচ, ধান কাটা এবং মাড়াইয়ে যে ব্যয় বেড়েছে তাতে ফসল থেকে লাভ তো দূরে থাক, আবহাওয়া যদি অনুকূলে না থাকে তাহলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। আর যারা জমি বর্গা নিয়ে চাষবাদ করছেন,আগামীতে তাদের অনেকেই চাষাবাদে নিরুৎসাহিত হবেন বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার প্রান্তিক কৃষক সোমেদ মিয়া বলেন, নিজের জমি তেমন একটা নেই। পরের জমিতে ফসল ফলিয়ে জীবন চলে। গায়ে খেটে কোনো মতে পরিবার নিয়ে দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে বেঁচে আছি। তবে জ্বালানি তেল এবং সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচ অনেক বেড়েছে। ফসলের দাম থাকলেও ধানের মৌসুমে আমরা ন্যায মূল্য পাই না। এতে করে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। তাই পরিস্থিতি এমন থাকলে আগামীতে জমিতে ফসল বোনা সম্ভব হবে না।
ডুমুরিয়া ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষক আবুল হোসেন জানান,কিছুদিন আগে জমিতে তিন হাল বাইতে শতাংশ প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা দিতে হতো, সেটা এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকা হয়েছে। তেলের দাম বাড়ায় শতাংশ প্রতি হাল চাষে ২০ টাকা করে বেড়েছে। শুধু তাই নয়, সারের দাম আকাশচুম্বী হয়ে গেছে।
তিনি খুলনার খবর প্রতিনিধিকে বলেন, ডিজেলের দাম বাড়ায় হাল চাষে শতাংশ প্রতি ২০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। ইউরিয়া সারের দাম প্রতি বস্তায় ৩০০ টাকা বেড়েছে। আর লাল পটাসের (এমওপি) বস্তা ৮০০ টাকা থেকে বেড়ে ১৫০০ টাকা হয়েছে। এতে করে চাষাবাদ করে লাভের মুখ দেখা যাবে না।
সাতক্ষীরার আরেক প্রান্তিক কৃষক ইউনুস মিয়া জানান,জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় জমিতে সেচের জন্য বিদুৎ বিল আগের তুলনায় শতাংশ প্রতি ২০ টাকা করে বেড়েছে। আগে শতাংশ প্রতি বিদ্যুৎতের জন্য দিতে হতো ৫০ টাকা এখন সেটা ৭০ টাকা হয়েছে। আগে সকাল ৬ টা থেকে ১০ পর্যন্ত কামলা নিলে ২০০ টাকা দিতে হতো। এখন ৩০০ টাকা দিয়েও কামলা পাওয়া যায় না। কামলার অভাবে সময়মত ধান উঠানো সম্ভব হয় না। তাই এভাবে সবকিছুর দাম বাড়তে থাকলে আগামীতে আর ফসল বোনা সম্ভব হবে না।
অন্যদিকে, সরকার গত ২৮ আগস্ট কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সার পরিস্থিতি মনিটরিংয়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে চাহিদার বিপরীতে দেশে সব রকমের সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।