1. info@www.khulnarkhobor.com : khulnarkhobor :
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৬ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি/বিজ্ঞাপন
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com    বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৪৭,আপার যশোর রোড (সঙ্গীতা হোটেল ভবন) নীচতলা,খুলনা-৯১০০।ফোন:০১৭১০-২৪০৭৮৫,০১৭২১-৪২৮১৩৫। মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
খুলনার খবর
লোহাগড়ায় ৮ দলীয় ফুটবল ডেভেলপমেন্ট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত খুলনার রূপসায় দুর্বৃত্তের গুলিতে যুবক আহত এমইউজের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভা, সদস্যের মৃত্যুতে ভোট স্থগিত প্রবীণ সাংবাদিক হারুনার রশীদ এর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ নাভারনে জামায়াত ইসলামের প্রচার ও স্বাগত মিছিল জামায়াতের আমীরের আগমন উপলক্ষে পাইকগাছার কপিলমুনিতে র‍্যালী ও পথসভা নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও প্রেস সচিবের বক্তব্য পরস্পরবিরোধী’ পাইকগাছায় শেখ ইমাম উদ্দীন ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্ধোধন পাইকগাছা উপজেলা আহলে হাদিস এর কর্মী সম্মেলন ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত  পাইকগাছার হরিঢালীতে আদর্শ লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শীতবস্ত্র বিতরণ খুলনা মহানগরীতে পুলিশের তালিকাভুক্ত কুখ্যাত সন্ত্রাসী হাড্ডি সাগর গ্রেফতার  খুলনায় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তার চেক প্রদান কেশবপুরে ইয়ুথ পিস এ্যাম্বাসেডর গ্রুপ-এর ত্রৈমাসিক সভা অনুষ্ঠিত তেরখাদায় ইয়াবা ও গাঁজাসহ ২জন মাদক ব্যবসায়ী ও ২জন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী গ্রেফতার উপদেষ্টা হাসান আরিফ আর নেই খুলনাসহ ৫ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস; সকাল থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি খালিশপুর থানা বিএনপি’র সম্মেলন-সভাপতি বাবু সাধারণ সম্পাদক হাবিব নির্বাচিত নগরীর জাতিসংঘ পার্কে ৫ দিন ব্যাপী ইসলামী বইমেলা শুরু প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) নিরোধ নীতিমালা-২০২৪ উন্মোচন অভয়নগরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্র-গুলিসহ আটক ৪

কেশবপুরের খেজুরগাছ কাটা গাছিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন-ভিডিও

  • প্রকাশিত : শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২২
  • ৩৫৯ বার শেয়ার হয়েছে

পরেশ দেবনাথ,মঙ্গলকোট,কেশবপুর// কেশবপুরের মঙ্গলকোট, বিদ্যানন্দকাটিসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে খেজুরগাছ কাটা গাছিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। খেঁজুরের রসে অসাধারন উপকার আছে। শীতের আগমনে শুরু হয় গাছিদের ব্যস্ততা। তারই ধারাবাহিকতায় যশোরের কেশবপুর উপজেলায় শীতের মৌসুম শুরু হতে না হতেই আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুরের রস আহরণে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে গাছিরা গাছ প্রস্তুত করতে শুরু করেছেন।

শীতকালে হাড়কাপানো ঠান্ডার মধ্যে রোদে বসে কাঁচা খেজুরের রস খেতে পছন্দ করেন অনেকে। শীত মৌসুমে গ্রামাঞ্চলে ঘরে ঘরে খেঁজুর রসকে প্রক্রিয়াজাত করে হরেক রকমের পিঠা, পুলি, পায়েস, গুড় পাটালী ইত্যাদি তৈরী করে থাকেন। সারা বছর খেজুরের রস সংগ্রহ করা না গেলেও শীত কালের খেজুরের রস বেশী সুস্বাদু । শীত কমার সাথে সাথে রসও কমতে শুরু করে। শেষের দিকের রস এত মিষ্টি যে গাল ফিরিয়ে আনা যায়না। গাছ যখন শক্ত হয়, রস কমে যায়, ফলে গাছিরা কাটতে চাইনা। খেজুরের গুড়ে আয়রন ও লৌহ বেশি থাকে এবং হিমোগ্লোবিন তৈরীতে সাহায্য করে। খেজুরের রস খনিজ ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। খেজুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। বাংলাদেশে যে খেঁজুর হয় তাতে আঁশের ভাগ কম থাকায় অনেকে পছন্দ করেন না। তাই খেজুরের রসই প্রধান। শীত বাড়ার সাথে সাথে রসের চাহিদাও বাড়ে। আগে অনেক গাছিরা বাণিজ্যিকভাবে খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করতো। কিন্তু এখন বিভিন্নভাবে গাছ কমে যাচ্ছে। আর যা গাছ আছে তা কেটে গাছিদের পোষাচ্ছে না। ফলে, এলাকায় গাছিরও অভাব হয়ে পড়েছে। এলাকায় কম বেশি হলেও ৩০/৩২ জন গাছির সন্ধান মেলে। তাতে খরিদ্দারদের পিঠা, পুলি, পায়েস খাওয়ার চাহিদা মেটাতে পারেন না।

কেশবপুর উপজেলার বাউশলা গ্রামের গাছি মান্নান গাজি জানান, গাছ তুলতে দা, দড়া, ঠুঙ্গি, বালু, বালধারা সবসময় প্রস্তুত রাখতে হয়। ছোট অবস্থা থেকে গাছ থেকে রস পাড়া এবং আস্তে আস্তে গাছ কাটা শুরু করি তা প্রায় ২৫ বছর। অধিকাংশ গাছিরা গাছ কাটা ছেড়ে দিয়েছে। গাছির অভাবে খেঁজুর গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। শীত পড়ার সাথে সাথে আমাদের গাছ তোলার কাজ শুরু করতে হয়। রস সংগ্রহ করার যায়গা তৈরী করার জন্য প্রথম দিকে গাছের দিক নির্ণয় করে। ডেগো পরিষ্কার করি। এর ১৫ দিন পর রস আসার জন্য গাছের মুখে চোখ কাটি, তাকে চাচ দেওয়া বলে । চাচের পাটালী অধিকাংশ লোকে পছন্দ করেন। প্রথম দিকে গাছ তুলতে খুব কষ্ট হয়। প্রতিদিন ১০/১২ টি করে গাছ তুলেছি। আমার ভাগের গাছগুলো তোলার পর অন্যের কিছু গাছ তোলার থাকলে তা তুলে দিই তাতে প্রতিটি গাছ চাচ দেওয়া পর্যন্ত এ বছর ১৫০টাকা এবং এর পর প্রতিবার গাছ কাটার সময় গাছ প্রতি ২০ টাকা হারে নেওয়ার চুক্তি করে নিয়েছি, তাতে আমার কিছু আর্থিক সাশ্রয় হয়। আমি এবার বিভিন্ন দিকে মোট ৬০/৬৫ টি গাছ কেটেছি। আমার প্রায় দিন গাছ কাটা বারি থাকে। অধিকাংশ গাছ ভাগে কাটি। মালিককে তিন ভাগের একভাগ অথবা একটা চুক্তি করে নিই। অনেক রস কাঁচা বিক্রি করি। এবাট প্রতি ভাড় কাঁচা রসের দাম ১২০/১৪০ টাকা নিতে হবে। আর পাটালি ও গুড় তৈরী করি। বর্তমান এককেজি পাটালী ১৪০/১৬০ টাকা বিক্রি করতে হবে। আমার পাটালীর যথেষ্ঠ চাহিদা রয়েছে। অনেকে অসাধুপায়ে পাটালী তৈরী করে বাজারে বিক্রি করে থাকে। রস বিক্রি করা আমার পক্ষে লাভ মনে করি। তাতে আমার খাটনি কমে যায় এবং কাটপাতা খরচ কম হয়। আমার পাটালী ভাল জেনে দূর থেকে অনেকে আমার বাড়ি পাটালী কিনতে আসেন । বিদ্যানন্দকাটি গ্রামের আফছার আলী জানান, তাল গাছ কাটার সময় হলে তালগাছ কাটি আর খেজুর গাছ কাটার সময় হলে খেজুর গাছ কাটি। আমি গাছ কাটতে কাটতে বুড়ো প্রায়। ১৫/১৬ টি গাছ কাটছি। মৌসূমে আসলে অধিকাংশ রস পিঠা, পুলি, পায়েস খেতে নিয়ে যায়। পিঠামোদি খরিদ্দারের চাহিদা মেটাতে পারি না। আলতাপোল গ্রামের মোনতাজ আলী জানান, আমি ২০/২২ টি গাছ কাটি। পাটালী তৈরী করি, দোকাট-তেকাটের রস গুড় বানাই।

মঙ্গলকোট গ্রামের বংশগত গাছি মৃত নাজেম উদ্দীন মোড়লের ছেলে মোজাম মোড়ল জানান, এলাকার চাহিদা মেটাতে আমি অল্প কিছু গাছ কাটি এবং বাকিটুকু বাচ্চা-কাচ্চাদের খাওয়ার জন্য রাখি। বসুন্তিয়া গ্রামের আকবর আলী জানান, বিদ্যানন্দকাটি গ্রামের আফছার আলী, মঙ্গলকোট গ্রামের রফিকুল ইসলাম, সাধা মোড়ল, নফর আলী, বাউশলা গ্রামের মান্নান গাজি, ছবুর গাজি, আলতাপোল গ্রামের মোনতাজ আলী, ফজলুর রহমান, নুর আলী, মোবারক আলী, জাহান আলী সরদার এরকম হাতে গোনা কয়েকজন গাছি আছে যারা কোনরকম টুকিটাকি গাছ কাটছে। প্রায় ছেড়ে দেওয়ার মত। খেজুর গাছগুলো দূরে দূরে থাকায় গাছিদের গাছ কাটতে হিমশিম খেতে হয়, ফলে তাদের গাছ কাটার প্রতি অনিহা দেখা যায়। এলাকায় বহু গাছি ছিল কিন্তু একশ্রেণীর ব্যবসায়ী বেশি দাম দেওয়ায় এবং কেহ কেহ গাছগুলি অপ্রয়োজন মনে করায় মালিকরা গাছ বিক্রি করে দিচ্ছেন। খেঁজুর গাছ কাটা গাছীর অভাবে অতি তাড়াতাড়ি হয়তো কাছ কাটা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

মঙ্গলকোট গ্রামের গাছি জামাল উদ্দীন সরদার বলেন, এই গ্রামে রফিকুল ইসলাম, হেকমত আলী, পীর আলী, সাইন, সিরাজুল ইসলাম-সহ ১০/১২ জন গাছি আছে।
বসুন্তিয়া গ্রামের নুর আলী জানান, যশোরের যশ খেজুরের রস’ এটি শুধু নামেই চলছে, কামে ঢং ঢং। আমাদের এলাকা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ ও গাছিরা। অধিকাংশ গাছিরা গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছে। তারা বলেন, এলাকায় গাছের অভাব হয়ে গেছে যা আছে তাতে কেটে পোষায় না। গাছি মোবারক আলী বলেন, এলাকার যশ ধরে রাখতে গেলে সরকারীভাবে খেঁজুরগাছ লাগানোর পরিকল্পনা নিতে হবে। ক’বছর যশোরের একঝাক তরুন এ যশ ধরে রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং গাছি সমাবেশ করেছিলেন এবং অন লাইনে গুড়-পাটালী বেচা-কেনা করছেন। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। তাঁদের এ চলার পথ প্রশস্থ্য হোক। গাছি জাহান আলী বলেন, এ যশ ধরে রাখতে শুধু গাছি সমাবেশ এবং অন লাইনে গুড়-পাটালী বেচা কেনা করলেই চলবে না। খেজুরগাছ কর্তন বন্ধ করতে হবে, পর্যাপ্ত গাছের জন্ম দিতে হবে। আবার আমাদের দেশে নিপা ভাইরাস আসাতে কাঁচা রস খাওয়া বন্ধ প্রায়। বেশী লোভীরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জীবনও হারিয়েছেন। নিপা ভাইরাস থেকে রক্ষা ও গাছ কাটার সহজ পদ্ধতি আবিষ্কার করতে হবে। নতুন পরিকল্পনা হলে নতুন নতুন গাছির জন্ম হবে। গাছিরা তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। এ লক্ষে বিভিন্ন এলাকায় গাছি ও সুধি সমাবেশ করতে হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারসহ উদ্যোমি যুব সমাজকে এগিয়ে আসলে তবেই যশোরের যশ খেজুরের রস কথাটি পুনরুজ্জীবিত হবে।

পরচক্রা গ্রামে যেয়ে কয়েকজন গাছির সাথে দেখা হয়। গ্রামের মোড়ল নফর আলী মোড়ল (৬৪) জানান, আমাদের পরচক্রা গ্রামে গাছি আব্দুল হালিম মোড়ল, আব্দুর রহমাম মোড়ল, রশিদুল ইসলাম, এসলেম খান, নূর ইসলামসহ ২০/২৫ জন গাছি আছে, গাছ আছে প্রায় ১০০০টি কিন্তু গাছির অভাবে সব গাছ কাটা হয়না। গাছি আব্দুল মালেক মোড়ল (৬৪) জানান, তিনি প্রায় ২ পোন অর্থাৎ ১৬০ টি গাছ কাটেন। বর্তমান ১ পোন তোলা হয়ে গেছে, আর ১ পোন ৪/৫ দিনের মধ্যে তুলে ফেলবেন বলে জানান। সরেজমিনে এই সকল গাছিদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, সরকারী সহযোগিতা পেলে তারা উৎসাহিত হওয়াসহ রস, গুড়, পাটালিগুড়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারবে।
বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের উপ সহকারী কৃষি অফিসার মোঃ আছানুর রহমান এ প্রতিবেদককে জানান, খেজুর গাছ কাটা গাছিদের তালিকা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে শতাধিক গাছির আইডি কার্ড জমা হয়েছে।

শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

youtube

https://youtube.com/@khulnarkhobor?si=v3cvg3zJmM54JYRa

Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:-  ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।