পরেশ দেবনাথ, কেশবপুর, যশোর।।যশোরের কেশবপুরে সন্তানের স্বীকৃতি চাওয়ায় তসলিমা বেগম নামে এক নারীকে বেধড়ক মারপিট করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সোহাগ হোসেনকে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
বুধবার (১৩ আগস্ট-২৫) সকালে হাসানপুর বাজারের প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তার মোড়ে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে হাসানপুর বাজারের অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ীসহ শতাধিক নারী পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে অসহায় নারী তসলিমা বেগম ও তার ছয় মাসের শিশুকন্যা রোজা খাতুনের উপর হামলাকারী দুশ্চরিত্র, লম্পট ও বকাটে সোহাগ হোসেনের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোরালো দাবি জানান ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, অভিযুক্ত সোহাগ হোসেন হাসানপুর বাজারে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে কম্পিউটার মেকানিকের কাজ করে। বিগত বছরগুলোতে তার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ ছিলো। বাজার কমিটির কয়েকবার তাকে নিয়ে সালিশ করতে হয়েছে। সে একজন দুশ্চরিত্র ও লম্পট। অসহায় নারী তাসলিমা বেগমকে বেধড়ক মারপিট ও জখম এবং হাত ভেঙে দেওয়ায় সোহাগের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
ভুৈক্তভোগীর অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চিংড়া গ্রামের মৃত রহিম সানার মেয়ে তসলিমা বেগম (৩৮) স্বামী পরিত্যক্ত হওয়ার পর থেকে একমাত্র ছেলে আলামিন হোসেন (১৯) কে নিয়ে প্রায় তিন বছর যাবত কাবিলপুর-হাসানপুর বেলের মাঠ এলাকায় রাশিদার কাছ থেকে বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছে। অপরদিকে শ্রীরামপুর গ্রামের আঃ রউফ এর ছেলে সোহাগ হোসেন (৩০) টিটাবাজিতপুর গ্রামে মামার বাড়িতে থেকে হাসানপুর বাজারে একটি দোকানঘর ভাড়া নিয়ে কম্পিউটারের মেকানিক হিসেবে কাজ করে আসছে। সেই সুবাদে তাসলিমা বেগমের সাথে সোহাগে হোসেনের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে সোহাগ হোসেন তসলিমার বাড়িতে আসা যাওয়া এবং নারীর সাথে অবাধ মেলামেশা করেন।
মেলামেশার একপর্যায়ে তসলিমা গর্ভবতী হয়ে পড়েন এবং ৬ মাস পর গর্ভের বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হয়। তার নাম রাখা হয়েছে রোজা খাতুন। বাচ্চা ভূমিষ্ট হওয়ার পর থেকেই সোহাগ বাচ্চাটিকে খুন জখম ও প্রাণনাশের বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৬ আগস্ট দুপুর ১২ টার দিকে সোহাগ হোসেন তসলিমার ভাড়াটিয়া বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে তাকে বেধড়ক মারধর করে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে হত্যার চেষ্টা চালায়। ওইসময় তসলিমার ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সোহাগ তাকে ও শিশু কন্যাকে খুন জখমের হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। বর্তমানে আহত ওই নারী সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সোহাগ হোসেনের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা, আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। ওই মহিলা আমার বিরুদ্ধে অহেতুক মিথ্যা-বানোয়াট অভিযোগ করছে। আমি তাকে মারপিট করেনি, তবে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছে। ওই সন্তান যদি আমার হয়ে থাকে তাহলে ডিএনএ টেস্ট করে সনাক্ত করা হোক।
এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, তসলিমা বেগমকে মারপিঠ করার ঘটনায় সোহাগ হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মারামারি মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতারের জন্যে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে সন্তানের স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য ওই নারীকে যশোর আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।